প্রবাল পাথর কি ?

প্রবাল পাথর বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নাম পরিচিত | সংস্কৃতে প্রবাল, বিদ্রুম, লতামনি, অঙ্গারক মণি, রক্তাঙ্গ নামে পরিচিত | হিন্দিতে মুঙ্গা, বাংলাতে প্রবাল, উর্দ্দু ও ফার্সিতে মির্জান এবং ইংরেজিতে কোরাল নামে পরিচিত |

এই রত্নটি কোনো পাথর নয় | তবে জ্যোতিষ শাস্ত্রে একে মহারত্নের স্থান দেওয়া হয়েছে | এটি সুমদ্রতলে পাওয়া যায় | এক বিশেষপ্রকার সামুদ্রিক জীব থেকে এর সৃষ্টি | সমুদ্র মধ্যে এই জীব কোটি কোটি সংখ্যায় জন্মায় | প্রবাল হল সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী যারা একসাথে বসবাস করে উপনিবেশ তৈরী করে এবং তাদের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম কার্বনেট নিঃসরণ করে থাকে ।এই জীবকুল সমুদ্রমধ্যে এতো বেশি পরিমানে জন্মায় যে তারা সমুদ্র মধ্যে উপনিবেশ তৈরী করে ফেলে এবং সময়ের সাথে সাথে এই ক্যালসিয়াম কার্বনেট পরবর্তী সময়ে পাথরের মতন শক্ত হয়ে ওঠে , ফলে সমুদ্রতলে এক প্রাচীরের ন্যায় সৃষ্টি করে , যাকে আমার প্রবাল প্রাচীর বলে উল্লেখ করে থাকি |

সমুদ্র মধ্যে প্রবালের রং খাঁকি রঙের হয়, কিন্তু সমুদ্র থেকে ওপরে তোলার পর প্রবালের রং হিঙ্গুল বা সিঁদুরের মতন হয় | আবার কখনো গোলাপি বা লাল রঙের ও হয়ে থাকে | এছাড়াও শ্বেতবর্ণের অথবা হরিদ্রাভাযুক্ত লাল প্রবাল ও পাওয়া যায় |

প্রবাল পাথরের উপকারিতা কি ? কিভাবে প্রবাল পাথর ধারণ করলে সুফল মেলে ?

আমরা অনেকেই প্রবাল পাথর ধারণ করে থাকি। প্রবাল পাথরের উপকারিতা কি? কিন্তু কোন আঙুলে প্রবাল পাথর ধারণ বেশি কার্যকরী? জোতিষশাস্ত্রে প্রবাল কে কেনই বা  এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ? মানুষের জীবনে কোন ধরণের সমস্যা সমাধান করে এই প্রবাল? কোন কোন রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে থাকে এই  প্রবাল পাথর? প্রবাল ধারণ কার পক্ষে শুভ ?

মঙ্গলবার মেষ অথবা বৃশ্চিক রাশিতে চন্দ্র বা মঙ্গল থাকলে সেই দিন মৃগশিরা, চিত্রা,ধনিষ্ঠা নক্ষত্র হলে, সেই দিন প্রাতে সূর্য উদয় থেকে এগারোটার মধ্যে  সোনার  আংটিতে প্রবাল বসিয়ে নেবে। যদি মঙ্গল মকর রাশিতে থাকে তাহলে সেদিন ও আংটি তৈরী করতে পারেন।

প্রবাল পাথরের উপকারিতা

প্রবাল পাথর কোন আঙ্গুলে পরা উচিত: প্রবাল যাতে শরীরে স্পর্শ করে থাকে, এইভাবে আংটিতে বসাতে হবে। এই আংটি বাঁ হাতের মধ্যমা অঙ্গুলিতে ধারণ করতে হবে।

প্রাতঃ এগারোটার পর মঙ্গল যজ্ঞ করবে। তামার ত্রিকোণ পাতে তার ওপর মঙ্গল যন্ত্র তৈরী করবে। তার ওপর প্রবাল পাথরের আংটি রেখে ষোড়শ উপাচারে পূজা করে ভৌম মন্ত্রে অভিষিক্ত করবে।

প্রবাল পাথর পরার নিয়ম: কমপক্ষে ছয় রতি সোনার আংটিতে আট রতি প্রবাল বসিয়ে আংটি তৈরী করাবে। আট রতির চেয়ে কম হলে, প্রবাল ভালো ফল দেয় না।

প্রবাল ধারণ করার দিন থেকে তিন বছর তিন দিন পযর্ন্ত প্রভাব যুক্ত থাকে। তারপর তার শক্তি কমে যায়। তারপর নতুন প্রবাল ধারণ করতে হবে।

                                                    মঙ্গল মন্ত্র

“ওঁ অগ্নিমুর্দ্ধাদিব ককুৎপতি পৃথিব্যাহয়ম|

অপাধু  রেতাধু সি জীনবতি || ভৌমায় নমঃ ||”

এরপর নিম্নলিখিত  লঘু মন্ত্রে ৭০০ (সাত শত ) হোম করবে। হোমের পর পূর্ণাহুতি দিয়ে  আংটি বা যন্ত্রে মঙ্গলের প্রাণ প্রতিষ্টা করবে।

মঙ্গল অধিক দূষিত হলে বা পাপ দুষ্ট হলে প্রবাল দান করতে হয়। তামার পাতে ভৌম যন্ত্র খোদাই করে সাতদিন পযর্ন্ত ষোড়শ উপাচারে পূজা করাবে নিম্নলিখিত মন্ত্র জপ করবে। অষ্টম দিনে যন্ত্র, প্রবাল, গম, রক্ত বস্ত্র, তাম্র  ব্রাহ্মণকে দান করবে।

মন্ত্র – “ওঁ ক্র্যাং  ক্রিং ক্ৰং সঃ ভৌমায়  স্বাহা|”

রোগ প্রতিকারে প্রবাল পাথরের ব্যবহার 

১| রক্ত সম্বন্ধিত রোগ বা ব্লাড প্রেসার হলে প্রবাল ভস্ম মধুসহ সেবনে উপকার হয়।

২| মন্দাগ্নি রোগে প্রবাল ভস্ম গোলাপ জলসহ সেবনে উপকার হয়।

৩| প্লিহা ও পেটের যন্ত্রনায় প্রবাল ভস্ম  দুধের সরের সঙ্গে খেলে  উপকার হয়।

৪| দুর্বলতায় প্রবাল ভস্ম অতান্ত উপকার করে।

৫| মৃগী, হৃদরোগ, বায়ুরোগ প্রভৃতিতে প্রবাল ভস্ম দুগ্ধসহ সেবনে উপকার হয়।

## কোন রাশির জাতক জাতিকারা প্রবাল ব্যবহার করবেন | প্রবাল শোধন করার নিয়ম কি? প্রবাল বা মুঙ্গা সমন্ধে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে আপনার নিকটবর্তী ভালো জ্যোতিষী এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

author-avatar

About Soahamparivar

Being the best and famous astrologer and vastu shastra consultant in Kolkata, Mr. Bhattacharyya gives accurate horoscope reading, perfect astrological remedies, and on-time solutions.