Astrology, Nakshatra, Zodiac

মানব জীবনে নবগ্রহের প্রভাব বেশি, নাকি পৃথিবীর প্রভাব বেশি?

মানব জীবনে নবগ্রহের প্রভাব বেশি, নাকি পৃথিবীর প্রভাব বেশি?

মানব জীবনে নবগ্রহের প্রভাব

রাশিচক্র ,রাশি ,গ্রহ ভাব এই চারটি বস্তু নিয়ে ফলিত  জ্যোতিষের কারবারকাজেই এই চারটি বস্তুর মূল ধারণা কী তা জানা দরকার | তা নইলে ফলিত জ্যোতিষের দিক থেকে এদের অর্থ এবং প্রয়োগ হৃদয়ঙ্গম করা শক্ত হবে |

আমরা জানি সূর্য রোজ আকাশের গায়ে একটু একটু করে সরে যান এবং ৩৬৫ দিন ঘন্টা মিনিটে সেকেন্ড পরে আকাশের ঠিক সেই বিন্দুতে ফিরে আসেন যে বিন্দু থেকে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল | আসলে পৃথিবী সূর্যকে বেড় দিয়ে ঘুরছে   ; কিন্তু আমরা দেখি সূর্য আকাশে একটু একটু করে সরে যাচ্ছেন | সূর্য আকাশের যে পথ দিয়ে রোজ একটু করে সরে সরে ৩৬৫ দিন ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড পরে আবার নিজের জায়গায় ফিরে আসেন তাকে সিদ্ধান্ত অর্থাৎ গণিত জ্যোতিষের ভাষায় বলে রবিমার্গ বা ক্রান্তিবৃত্ত (Ecliptic )|

এই রবিমার্গ বা  Ecliptic হচ্ছে জ্যোতিষ গণনার মূল ভিত্তি | কেননা এই রবিমার্গের উপরে গ্রহ এবং ভাবের অবস্থান নির্দিষ্ট হয়ে থাকে | রবিমার্গ সূর্যের গতিপথ | সূর্যের যেমন পৃথিবীর উপর প্রভাব আছেতেমনি রবিমর্গেরও  পৃথিবীর উপর প্রভাব আছে এবং যে  সব গ্রহ বা নক্ষত্র রবিমর্গের উপর নিজেদের শক্তি বিস্তার করে ,পৃথিবী তাদের দ্বারাও প্রভাবিত হয় |

একটা গ্রহ বা নক্ষত্র অংশ দূর থেকে রবিমর্গের উপর প্রভাব স্থাপন করতে পারেকাজেই তার দু পাশে অংশের মধ্যে যত নক্ষত্র আছে তারা রবিমর্গের উপর নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে | রবিমার্গ আকাশের গা দিয়ে একটু ট্যারাচা ভাবে পূব থেকে পশ্চিমে সমস্ত পৃথিবীটাকে বেড়ে রয়েছে | রবিমর্গের উত্তরে অংশ দক্ষিণে অংশের মধ্যে যত নক্ষত্র আছে , তাদের যদি একটা চওড়া   পটির মতো কল্পনা করা যায় ,তাহলে আমরা মনে করতে পারি ,আকাশের গায়ে লাগানো একটা চওড়া পটির চাকা পৃথিবীকে বেড় দিয়ে ঘুরছে | চওড়া পটির এই চাকাকেরাশিচক্রবলে |

মানব জীবনে নবগ্রহের প্রভাব 1

 যদিও সমস্ত রাশিচক্রটা আমাদের বেড় দিয়ে ঘুরছে তাহলেও সেই চক্রের মধ্যে যে নক্ষত্রটি যেখানে বসানো আছে তার কোন নড়চড় হয় না ,সে নক্ষত্রগুলি স্থিরএবং সেই জন্যেই  এক একটি নক্ষত্রপুঞ্জ ধরে তাদের আলাদা নাম দেওয়া সম্ভব হয়েছে | সমস্ত রাশিচক্রকে বারটি  নক্ষত্রপুঞ্জজে ভাগ করা হয় এবং এদের এক একটিকে বলে রাশি |

প্রত্যেক রাশি মাপে সমানকাজেই এক একটি রাশি লম্বালম্বিভাবে ক্রান্তিবৃত্তের ৩০ অংশ এবং আড়াআড়িভাবে   উত্তরে অংশ এবং দক্ষিণে অংশ জুড়ে আছে | রাশি বারটিমেষ ,বৃষ ,মিথুন ,কর্কট ,সিংহ ,কন্যা ,তুলা ,বৃশ্চিক ,ধনু ,মকরকুম্ভ এবং মীনএক রুদ্র ছাড়া যতগুলি গ্রহ আছে তাদের পৃথিবী দেখলে কোন সময়ে রাশিচক্রের বাইরে যেতে দেখা যায় না | সূর্য তো বরাবরই  রবিমর্গের উপরে থাকেনঅন্য গ্রহগুলির মধ্যে রুদ্র (Pluto ) ছাড়া অপর কোনও গ্রহ কখনো আরোভাবে আড়াআড়িভাবে   রবিমার্গ থেকে / অংশের বেশি দূরে যায় না | কাজেই তারা রাশিচক্রের মধ্যে  থাকে

গণিত জ্যোতিষের গ্রহের ধারণা ফলিত জ্যোতিষের গ্রহের ধারণা এক নয় ,যে গগনচারীর প্রভাব পার্থিব ব্যাপারের  উপর একটা বিশেষভাবে প্রকটিত হয়সে গগনচারী গ্রহে হোক ,উপগ্রহে হোক ,আর গাণিতিক বিন্দুই হোকতাতেই  ফলিত জ্যোতিষে গ্রহ বলে অবিহিত করা হয় | ফলিত জ্যোতিষের মতে গ্রহ তিন রকম () তারা গ্রহ ,() দীপ্ত গ্রহ এবং () তমো গ্রহ | এর মধ্যে তারাগ্রহগুলিই গণিত জ্যোতিষের গ্রহএই তারা গ্রহ আটটিমঙ্গল ,বুধ ,বৃহস্পতি ,শুক্র ,শনি ,প্রজাপতি (Uranus ) ,বরুন (Neptune  ) রুদ্র (Pluto  ) | দীপ্তগ্রহ দুটিরবি চন্দ্রগণিত জ্যোতিষের মতে রবি স্থির নক্ষত্র এবং চন্দ্র উপগ্রহ | তমোগ্রহ   দুটিরাহু কেতুগণিত জ্যোতিষের মতে দুটি গাণিতিক বিন্দুরবিমর্গের সঙ্গে চন্দ্রের কক্ষের যে দুই জায়গায় ছেদ হয়েছে তারাই রাহু কেতু | ছাড়া  পৃথিবী  একটি প্রধান গ্রহ এবং পৃথিবীর জীব আমরা ,পৃথিবীর প্রভাবই আমাদের উপর সব চেয়ে বেশি | কিন্তু পৃথিবীর উপর অন্য সব গগনচারীর প্রভাব বিচারে ফলিত জ্যোতিষের কাজ বলে , বিজ্ঞানে তাকে গ্রহ বলে ধরা হয়নি | রাশিচক্রে পৃথিবীর অবস্থানের বারটি বিন্দু কল্পনা করা হয়এই বারটি বিন্দুকে বারটি ভাব বলা হয়ে থাকে|

Author Bio

Related Posts

Start typing to see posts you are looking for.
ENQUIRY FORM