কোন ফুল দিয়ে পুজো করলে গণেশ ভগবান সন্তুষ্ট হবেন?
আমাদের ৩৩৬ কোটি দেবতা আছে | সারা বছর ধরে আমরা নানা দেবতার পুজো করে থাকি | সব দেবতার পুজোর আগে গণেশ পুজো হয় | সিদ্ধিদাতা গণেশ যদি রুষ্ট হয় তাহলে আমাদের জীবনে নানা বাধা বিঘ্ন আসে আর তিনি যদি তুষ্ট হলে আমাদের জীবনে সব বাধা বিঘ্ন দূর হয়ে যায় | সিদ্ধিদাতা গণেশ কে নিয়ে অনেক বিতর্ক ও আছে |
গণ + ইস = গণেশ | গণ কথাটির আসল অর্থ সমষ্টি | আবার গণ কথাটির অর্থ জনগণ কে ও বোঝায় | জনগণের ঈশ্বর গণেশ | গণেশের ওপর নাম গণপতি | গণেশের দেহের ওপর গজমুণ্ড থাকে তাই তিনি গজানন নামেও পরিচিত |
গণেশের ২ রকমের ধ্যান মন্ত্র আছে | পৌরাণিক আর তান্ত্রিক | পৌরাণিক মন্ত্রেই গণেশের পুজো হয়ে থাকে |গণেশ এর ছোটোখাটো দেহ | দেহের মধ্যে বড়োধামার মতো ভুরি আছে |আর আছে গজমুখ |গায়ের রং টুকটুকে লাল | আবার দুধ সাদা মুখমন্ডল ও দেখা যায় গণেশের | গণেশের হাতে ৪ রকমের অস্ত্র থাকে | যেমন শঙ্খ ,চক্র ,গদা ,পদ্ম | কুলোর মতো বড়ো ২টো কান আছে |গণেশ হলো একমাত্র দেবতা যিনি জবা ফুলে পূজিত হন |
আমরা কোনো শুভ জিনিস লেখার আগে “সিদ্ধি “এই শব্দ টি লিখে থাকি | এই “সিদ্ধম ” শব্দ টি থেকে গণেশের সিদ্ধিদাতা নামটি এসেছে | সিদ্ধিদাতা কথাটির অর্থ লেখা লেখিতে সফলতা পাওয়া | লেখা যাতে সফলতা অর্জন করতে পারে তার জন্য সবার আগে গণেশ বন্দনা করা হয় | এমনকি অফিসে ও কাজ শুরু করার আগে ” গণেশায় নমঃ ” লিখে তার পর কাজ কর্ম শুরু হয় |
আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা আগে দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশে গণেশ ছিলেন বিঘ্ন সৃষ্টিকারী দেবতা |কোনো শুভ কাজে গণেশ যাতে কোনো বাধা না দিতে পারে তার জন্য সবার আগে গণেশের আরাধনা করতে হয় | ধীরে ধীরে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী দেবতা বিঘ্ন নাশকারী দেবতা হয়ে উঠলেন |
কোনো শুভ কাজ শুরু হতে অযথা দেরি হচ্ছে , যাতে সেটা না হয় , আবার ধরুন কোনো নারী অপরূপ সুন্দরী হয়েও তার বিয়ে হচ্ছে না , আবার অনেক পড়াশুনো জানা হয়েও কোনো চাকরি না পাওয়া ,ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে কথিত আছে এই সব কিছু গণেশ রুষ্ট হলে হয় |
যিনি বিঘ্নস্রষ্টা তিনিই আবার বিঘ্নহর্তাও |ভগবান গণেশের পুজো করলে সব কাজ খুব সহজ হয়ে যায় | তিনি মঙ্গলময় | অপারকরুণাময় |
বহু বছর ধরে এই গণেশ পুজো হয়ে আসছে | আমরা অবশ্য গণেশ কে ধনদেবতা হিসাবে পুজো করে থাকি | পয়লা বৈশাখীরদিন আবার অক্ষয় তৃতীয়ারদিন আমরা গণেশ পুজো করে থাকি | আবার মহারাষ্ট্রে এই পুজোর বিরাট আড়ম্বর হয়ে থাকে | ১০ দিন ধরে এই উৎসব চলতে থাকে | বাড়ি ঘর আলোদিয়ে সজ্জিত করা হয় | গণেশ সর্বসাধারণের দেবতা | ভাদ্র মাসে এই গণেশ চতুর্থীর গণেশ পুজো আমাদের সবার মনে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে | এছাড়াও সরস্বতী পুজোর আগের দিনেও গণেশ পুজো হয়ে থাকে | তবে এর প্রচলন খুবই সীমিত | গণেশের পুজো করলে শিক্ষার্থীর শুভ ফল লাভ হয় , আবার ব্যাবসায়ীদের অর্থ লাভ হয় | তিনি সর্ব শক্তিমান | তিনি ভক্ত কে সব বিপদ থেকে রক্ষা করেন |
তিনি ভক্তের ভগবান | তার কৃপায় বাধা বিঘ্ন সব দূর হয় | ধন সম্পত্তি লাভ হয় | বাবসাবাণিজ্যে উন্নতি হয় | গৃহে শান্তি বিরাজ করে | বিদ্যার্থী বিদ্যা লাভ হয় | হে গণপতি তোমাকে শতকোটি প্রণাম |