আমরা সবাই জানি , বাঙ্গালীরা ভোজন রসিক | পুজো পার্বণ , আনন্দ অনুষ্ঠানে , সব কিছুতেই ভালো কিছু খাওয়া – দাওয়া করতেই হবে | আমরা বেশির ভাগ লোক আমিষ খাবার পছন্দ করে থাকি |কিন্তু শরীর ঠিক রাখতে মাঝে মাঝে নিরামিষ খাওয়াও খুব দরকার | আর সপ্তাহের কোন কোন দিন এই নিরামিষ খাবার খাওয়া ভালো সেটা নিয়ে আলোচনা করবো | নিরামিষ আহার করলে শরীর তো সুস্থ থাকবেই আর তার সাথে অনেক রোগ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব |
আমরা সবাই জানি ভালো পুষ্টিকর খাবার শরীরের পক্ষে খুব দরকারি | এই যে পুষ্টিকর খাবার সবার শরীরের জন্য ভালো না ও হতে পারে | যে খাবার টা একজন সুস্থ মানুষ খেয়ে হজম করতে পারবে সেই একই খাবার অসুস্থ মানুষের জন্য একদম ঠিক না |
নিরামিষ খাবারের অনেক উপকার আছে | তবে আপনি হটাৎ নিরামিষ আহার শুরু করলে আপনাকে
সবার আগে মানসিক দিক থেকে তৈরী থাকতে হবে | এই নিরামিষ আহার যেমন সহজেই হজম হয় | তেমন ই শরীর গঠনের জন্য ও উপকারী | এই নিরামিষ খাবার এর মধ্যে আছে ভিটামিন সি , ভিটামিন ই , ফলিক অ্যাসিড , ম্যাগনেশিয়াম, ইত্যাদি | যে সব ব্যাক্তি নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন সাধারণত তাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ কিংবা উচ্চ কোলেস্টেরোল দেখা যায়না | শুধু তাই নয় , নিরামিষ আহার করা ব্যাক্তির হৃদরোগের সম্ভবনা অনেক কম থাকে |
এই নিরামিষ আহার যেমন সহজে হজম হয় তেমন আবার সাশ্রয়ীও | এই নিরামিষ খাবারের মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে | এই ফাইবার আমাদের শরীরের জন্য খুব ভালো এবং দরকারি |
আমাদের খাদ্য তালিকায় রোজ যদি ফল , সবুজ শাক সবজি রাখা যায় তাহলে সেটা আমাদের শরীরের জন্য খুব ভালো | এই নিরামিষ আহার করেন যে ব্যাক্তি তার দীর্ঘ আয়ু লাভ হয় | আমরা সবাই জানি উদ্ভিজ ফ্যাটে কোনোরকম কোলেস্টেরোল থাকেনা | এই কোলেস্টেরোল আমাদের শরীরের জন্য ও দরকারি | যে ব্যাক্তি নিরামিষ আহার করেন সেই ব্যাক্তি সব রকম রোগের হাত থেকে দূরে থাকবেন | দীর্ঘায়ু হবেন |
যে সব ব্যাক্তি আমিষ আহার করেন তাদের রক্তে শর্করার পরিমান বেশি থাকে | এই সব ব্যাক্তি আমিষ আহার ত্যাগ করে নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন তাহলে কিছু মাসের মধ্যে শর্করার পরিমান অনেকটাই কমে যাবে | নিরামিষ খাবার উচ্চ রক্তচাপ কমায় তার পাশাপাশি নিরামিষ খাবার শরীরের পুষ্টি জোগায় আর ফ্যাটি এসিডের পরিমান কমিয়ে শরীর কে সুস্থ রাখে |
এই নিরামিষ আহার করা ব্যাক্তির হার্ট ও সব সময় ভালো থাকে | তার পাশাপাশি ভালো , সুস্থ ত্বকের জন্য নিরামিষ আহার খুব দরকারি |
ফল আর সবুজ সবজিতে প্রচুর পরিমানে আন্টি –অক্সিডেন্ট থাকে আর প্রচুর জল থাকে তাই ফল আর সবজি খেলে ত্বক হবে উজ্জ্বল আর টানটান | আপেল ,বেগুন ,রসুন ,লেবু ,টমেটো এবং চা এগুলি থেকে প্রচুর পরিমানে আন্টি – অক্সিডেন্ট থাকে যা কিনা ত্বকের জন্য খুব ভালো |
জোতিষ শাস্ত্রে বলা আছে যে আপনি যদি নিরামিষ খান তাহলে শুধু শরীর না আপনার মন ও অনেক টা ভালো থাকবে | মানসিক শান্তি পাবেন | মানসিক উদ্বেগ কম হবে | এই সবুজ সবজি গুলো যদি জৈব উপায়ে তৈরী করা হয় তাহলে তা আমাদের শরীরের পক্ষে বহুগুন ভালো হবে |জোতিষ শাস্ত্রে বলা আছে রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি এক গ্লাস দুধ খাওয়া যায় তাহলে সেটা আমাদের শরীরের পক্ষে খুব ভালো |
নিরামিষ খাবার খুব সহজেই হজম হয় | নিরামিষ আহার সহজ পাচ্য , শুধু তাই নয় আমাদের শরীরের ফ্যাট বিপাকে সাহায্য করে |
জোতিষ শাস্ত্রে বলা আছে যে জাতক গণ যদি চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান তাহলে ভিটামিন এ খাওয়া খুব দরকারি | কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায় ? এবার সেগুলি দেখা যাক | কুমড়ো ,গাজর ,বিট ,লেবু এগুলি থেকে আমরা ভিটামিন এ পাই | কালোজাম আর জামরুল খাওয়াও চোখের জন্য ভালো |
চাল আর ডাল দিয়ে তৈরী খিচুড়ি শরীরের পক্ষে খুব ভালো |সহজে হজম হয় | আর খাবারের পুষ্টিগুণ গুলি শরীরের মধ্যে শুষে নেয় | মাছ , মাংস , ডিম্ বেশি পরিমানে খেলে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে | এমনকি কিডনির সমস্যা ও দেখা দিতে পারে | পেয়ারা ,আপেল ,লেবু ,ক্যাপসিকাম ,ফুলকপি এই সব ফল আর সবজি থেকে আমরা নানা রকম উপকার পাই |
জোতিষ শাস্ত্রে বলা আছে যে আমিষ খাবারের তুলনায় যদি নিরামিষ খাবার রোজ রোজ খাওয়া যায় তাহলে আপনার শরীর তো সুস্থ থাকবেই তার পাশাপাশি অর্থ সাশ্রয় ও হয় | নিরামিষ খাবার আমিষ খাবারের তুলনায় মূল্য অনেকটাই কম হয় | তাই সব দিক থেকে বলা যায় নিরামিষ আহার করা খুব ভালো |