কেন আপনার বিবাহিত জীবন এত সমস্যায় জর্জরিত?

কেন আপনার বিবাহিত জীবন এত সমস্যায় জর্জরিত

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিবাহ বা বিবাহিত জীবন কেমন হবে বা কেমন চলছে এ নিয়ে বহু চর্চা পরিবার বা আত্মীয় পরিজনের মধ্যে হয়েই থাকে |

কারণ বিবাহের কথাবার্তা, পাকাদেখা, চূড়ান্ত দিন স্থির করা বা বিবাহের পরবর্তী অবস্থা যেমন দাম্পত্য সুখ, দাম্পত্য সৌখ্য, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক মিল বা অমিল, আত্মীয় সম্পর্ক কেমন হবে ,শয্যাসুখ আছে কিনা, অবৈধ্য সম্পর্ক হবে কিনা, শ্বশুর বাড়ির লোকজন কেমন হবে, যৌতুক প্রদান করতে হবে কিনা এই বিষয়ে বিবাহ উপযুক্ত জাতক জাতিকাদের পরিবারের লোকজন সর্বদা উদ্বিঘ্ন থাকে |

তাই এই সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেতে মানুষজন জ্যোতিষের পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে | এই সব প্রশ্নের উত্তর নিম্নে আলোচিত হল |

 (১) জন্মকুন্ডলীর কোন ভাব থেকে বিবাহ বিচার করা হয় ?

সপ্তমভাব থেকে বিবাহ বিচার করা হয় | সপ্তমভাব বা ঘরকে বলা হয় বিবাহের ঘর | পুরুষের পক্ষে পত্নীর বিচার , স্ত্রীলোকের পক্ষে স্বামীর বিচার এই সপ্তমভাব থেকেই করা হয় | শুধুমাত্র লগ্নের সপ্তমভাব বিচার করলে সঠিকভাবে বিবাহ বিচার করা যায় না , জন্মরাশির অর্থাৎ চন্দ্রের সপ্তমভাব এবং শুক্রস্থিত রাশির সপ্তমভাবেরও বিচার করা উচিত |

লগ্ন চন্দ্র ও শুক্র – এই তিনের সপ্তমভাবে কোন গ্রহ অবস্থান করছে , কোন গ্রহ সপ্তমভাবকে দৃষ্টি দিচ্ছে , সপ্তমপতি গ্রহ কোন ভাবে , কোন গ্রহের সঙ্গে , কোন ভাবাধিপতির সঙ্গে অবস্থান করছে বা কোন গ্রহের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় বা সহাবস্থান সম্বন্ধে আবদ্ধ – এইসব কিছুরই পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে তবেই বিবাহ বিষয়ে বা বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে আসা যায় |

(২) বিবাহের পূর্ববর্তী অর্থাৎ বিবাহের কথাবার্তা, পাকাদেখা , চূড়ান্ত দিন স্থির করা , বাগদান ইত্যাদি জন্মকুন্ডলীর কোন ভাব থেকে বিচার্য ?

প্রতিটি ভাবের নবমভাব সেই ভাবের কারণের নির্দেশক | বিবাহের বিচারে যেহেতু সপ্তমভাবটিই মূল বা প্রধান ভাব, তাই সপ্তমভাবের নবম অর্থাৎ লগ্নের তৃতীয়ভাবটিই বিবাহের পূর্ববর্তী অবস্থা জানার জন্য প্রধান বিচার্য ভাব |

(৩) বিবাহের পরবর্তী অবস্থা অর্থাৎ দাম্পত্য সুখ , দাম্পত্য সৌখ্য, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক মিল বা অমিল ইত্যাদি জন্মকুন্ডলীর কোন ভাব থেকে বিচার্য্য ?

প্রতিটি ভাবের পঞ্চমভাব সেই ভাবের পরিণতি বা ভবিষ্যতের নির্দেশক | বিবাহ বিচারে যেহেতু সপ্তমভাবটিই প্রধান বিচার্য ভাব , তাই বিবাহের পরবর্তী অবস্থা জানতে হলে সপ্তমভাবের পঞ্চমভাব অর্থাৎ লগ্নের একাদশভাবটি বিশেষভাবে বিচার্য |

(৪) বিবাহের মাধ্যমে বহুজনের সঙ্গে নতুন কুটুম্বিতা বা আত্মীয়তার সম্বন্ধ স্থাপিত হয় | জন্মকুন্ডলীর দ্বাদশভাবের কোন ভাব থেকে কুটুম্ব বা আত্মীয়তার বিচার করা হয় ?

দ্বিতীয়ভাব থেকে কুটুম্বিতা বা আত্মীয়তার বিচার করা হয় | দ্বিতীয়ভাব বা দ্বিতীয় ঘরকে কুটুম্ব বা আত্মীয় ঘর বলা হয়ে থাকে |

দ্বিতীয়ভাব বা আত্মীয়ভাবের যথাযথ বিচার করতে হলে লগ্ন, চন্দ্র ও শুক্রের দ্বিতীয়ভাব ও দ্বিতীয়ভাবাধিপতির বিচার করা উচিত |

দ্বিতীয়ভাবে কোন গ্রহের দৃষ্টি রয়েছে , কোন কোন গ্রহ দ্বিতীয়ভাবে অবস্থান করছে এবং দ্বিতীয় ভাবাধিপতি গ্রহ কোন গ্রহ দ্বারা দৃষ্ট হয়ে কোন গ্রহের সঙ্গে কোন ভাবে অবস্থান করছে – এ সব কিছুরই যথাযথভাবে বিচার করতে হবে |

(৫) বিবাহিত জীবনে গৃহসুখ কতখানি পাওয়া যাবে , তা দ্বাদশ ভাবের কোন ভাব থেকে বিচার্য ?

চতুর্থভাব বা চতুর্থ ঘরকে সুখ ভাব বা সুখের ঘর বলা হয় | বিবাহিত জীবনের গৃহসুখ বিচার করতে হলে লগ্ন, চন্দ্র এবং শুক্র – এই তিনের চতুর্থভাব ও চতুর্থভাবাধিপতির যথাযথ বিচার করা উচিত |

(৬) কোন ভাব থেকে শয্যাসুখ বিচার করা হয় ?

দ্বাদশভাব থেকে শয্যাসুখ বিচার করা হয় | লগ্ন , চন্দ্র ও শুক্র – এই তিনের দ্বাদশ ভাব ও দ্বাদশভাবাধিপতির শুভাশুভ অবস্থান ও বলাবল থেকেই বিবাহিত জীবনের শয্যাসুখের বিচার করা উচিত |

(৭) যৌনজীবনের স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতায় দাম্পত্য জীবন প্রভাবিত হয় | এ সম্বন্ধে সঠিকভাবে জানতে হলে কোন ভাবটি বিশেষভাবে বিচার্য ?

দ্বাদশভাব থেকে যৌনজীবনের স্বাভাবিকতা বা অস্বাভাবিকতার বিচার করা হয় | লগ্ন, চন্দ্র ও শুক্র – এই তিনের দ্বাদশভাব ও দ্বাদশ ভাবাধিপতির শুভাশুভ অবস্থান ও বলাবল থেকেই যৌনজীবনের গতিপ্রকৃতির নির্দেশ পাওয়া যাবে |

(৮) দ্বিতীয়া বা তৃতীয়া স্ত্রী বা পত্নীর বিচার দ্বাদশভাবের কোন ভাব থেকে করা হয়ে থাকে ?

প্রথমা স্ত্রীর বিচার সপ্তমভাব থেকে করা হয় | সপ্তমের ষষ্ঠ অর্থাৎ লগ্নের দ্বাদশ স্থানটি হল দ্বিতীয়া স্ত্রীর ঘর | দ্বাদশের ষষ্ঠ অর্থাৎ লগ্নের পঞ্চম স্থানটি হল তৃতীয় স্ত্রীর ঘর |

(৯) শাশুড়ির সম্বন্ধে জানতে হলে দ্বাদশভাবের কোন ভাব বিচার্য ?

সপ্তমভাব থেকে পত্নীর বিচার করা হয় | শাশুড়ি অর্থাৎ পত্নীর মা | সপ্তমের চতুর্থস্থান অর্থাৎ লগ্নের দশমস্থান বা ভাব থেকেই শাশুড়ির সম্বন্ধে জানা যায় |

(১০) শ্বশুরের সম্বন্ধে জানতে হলে দ্বাদশভাবের কোন ভাব বিচার্য ?

সপ্তমভাব থেকে পত্নীর বিচার করা হয় | শ্বশুর অর্থাৎ পত্নীর পিতা | সপ্তমের নবম বা দশম অর্থাৎ লগ্নের তৃতীয় বা চতুর্থভাবটি হল শ্বশুরের ঘর বা শ্বশুর সম্বন্ধে জানার ভাব |

(১১) শ্যালকের সম্বন্ধে জানতে হলে দ্বাদশভাবের কোন ভাব বিচার্য ?

সপ্তমভাব থেকে পত্নীর বিচার করা হয় | শ্যালক অর্থাৎ পত্নীর ভাই | সপ্তমের তৃতীয় অর্থাৎ লগ্নের নবমভাব হল শ্যালক বিষয়ে বিচার্য ভাব |

(১২) বিবাহের মাধ্যমে স্ত্রীধন বা যৌতুক প্রাপ্তি বিষয়ে জানতে হলে দ্বাদশভাবের কোন কোন ভাবকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করতে হবে ?

সপ্তমের দ্বিতীয় অর্থাৎ লগ্নভাবের অষ্টমভাব, সপ্তমের চতুর্থ অর্থাৎ লগ্নভাবের দশমভাব , সপ্তমের নবম অর্থাৎ লগ্নভাবের তৃতীয়ভাব , সপ্তমের একাদশ অর্থাৎ লগ্নভাবের পঞ্চমভাব – এই স্থানগুলির শুভাশুভত্ব বিচারের মাধ্যমে স্ত্রীধন বা বিবাহে যৌতুক প্রাপ্তির বিচার করা হয় | এছাড়া সপ্তমে ভাবাধিপতিস্থিত রাশি থেকে দ্বিতীয় , চতুর্থ , নবম ও একাদশভাব বিচার করলেও বিবাহে স্ত্রীধন বা যৌতুক প্রাপ্তির গতিপ্রকৃতি বিষয়ে জানা সম্ভব |

Author Bio

Related Posts