ব্রাহ্মণ সন্তানদের জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে কৈশোর সংস্কার (উপনয়ন) করা কি আবশ্যিক ?

ব্রাহ্মণ সন্তানদের উপনয়ন

চেতনাবোধ ,ন্যায়বোধ ,সদাচার ,আর দায়িত্ব -কর্তব্য বোধ মানুষ কে সবার ওপরের আসনে বসিয়েছেন | ধর্ম হলো এইসব গুনের মূল | মানুষের মনুষত্ব কে বিকশিত করেছে ধর্ম | সেই ধর্মকে অগ্রাধিকার দিয়ে ব্রাহ্মণদিগের কৈশোর সংস্কার করা জরুরি | কৈশোর  সংস্কার কি ভাবে পালন করলে জাতক জাতিকা কি কি সুফল পাবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করবো |

চূড়াকরণ : শাস্ত্র মতে এই চূড়াকরণ প্রক্রিয়াটি খুব গুরুত্বপূর্ণ | এই চূড়াকরণ করাহয় শুধু ব্রাহ্মণ সন্তানদের ক্ষেত্রে | নবজাতক শিশুটি জন্মের পর দুবছর কেটে গেলে অর্থাৎ তৃতীয় বছরে এই চূড়াকরণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে | এটাই সঠিক সময় | তবে যদি কোনোকারণে তৃতীয় বছরে এই প্রক্রিয়াটি করা সম্ভব হলো না তবে সেক্ষেত্রে পাঁচবছরে চূড়াকরণ প্রক্রিয়াটি করা যাবে | ব্রাম্মন সন্তান ছাড়া অন্য কোনো বর্ণের সন্তানদের এই প্রক্রিয়াটি করা যাবে না | এই চূড়াকরণ প্রক্রিয়াটি করার আগে বৃদ্ধি শ্রাদ্ধ বা নান্দীমুখ শ্রাদ্ধ করতে হবে |

উপনয়ন 1

চূড়াকরণের সুফল : এই চূড়াকরণের সুফল আছে শাস্ত্র মতে | এই পক্রিয়ায় নবজাতক সন্তান দৈব আশীর্বাদ লাভ করে |সন্তান এর মঙ্গল হয় |শুধু তাই নয় নবজাতক সন্তানটি বুদ্ধির বিকাশ লাভ হয় | সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় | সন্তানের স্মৃতিশক্তি ও মেধার বিকাশ লাভ হয় |শিশুটি পন্ডিত হয় |

উপনয়ন : শাস্ত্র মতে এই উপনয়নের নিয়মটি খুব গুরুত্বপূর্ণ | এই উপনয়নের বয়সের কিছু বাধা নিষেধ আছে | যেমন ধরুন শিশুটি যদি ব্রাহ্মণ হয় তাহলে অষ্টম বছর বয়স টি সঠিক সময় উপনয়ন এর | আবার শিশুটি যদি ক্ষত্রিয় হয় তাহলে এগারো বছর বয়স | আবার শিশুটি যদি বৈশ্য হয় তাহলে বারো বছর বয়স |ব্রাহ্মণ সন্তানদের ক্ষেত্রে যদি অষ্টম বছরে উপনয়ন না হয়ে থেকে তাহলে সেক্ষেত্রে বারো বছর বয়সে উপনয়ন করানো যাবে |আর যদি বারো বছর বয়সে যদি উপনয়ন না হয় তাহলে হোমাদিক্রিয়া করে তার পর প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় |শাস্ত্র মতে ব্রাম্মন শিশুটি যদি জন্মের পর থেকে পনেরো বছর তিন মাস পর্যন্ত উপনয়ন করার কথা বলা আছে | যদিও এই সময় এর মধ্যে না হয় উপনয়ন তাহলে “ব্রাত্য ” প্রায়শ্চিত্ত করা দরকার | এই উপনয়নের আগে ও বৃদ্ধি ,নান্দীমুখ ও হোমাদি ক্রিয়া করতে হবে | ব্রাহ্মণ সন্তান দের এই উপনয়ন হয়ে গেলে তাদের আবার দ্বিতীয় জন্ম লাভ হয় | এর পর থেকে দৈব কাজে অংশ নিতে পারবে |

উপনয়নের সুফল : এই উপনয়নের কিছু সুফল দিক আছে | শাস্ত্র মেনে ঠিক সময় শিশুটি কে যদি উপনয়ন করানো যায় তাহলে সেই শিশুটি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় | দীর্ঘ আয়ু লাভ করে | সব ধরণের বাধা বিঘ্ন থেকে মুক্তি লাভ করে |বিদ্যা বুদ্ধি লাভ করে |শিশুটি ধীর স্থীর হয় |

Author Bio

Related Posts