মঙ্গল – মেষ রাশির অধিপতি গ্রহ গুণগতভাবে তামসিক | আমাদের এই জগৎ পুরুষ আর প্রকৃতির খেলাঘর বলে গ্রহদের মধ্যেও পুরুষ ও প্রকৃতির ভাব দেখা যায় | সেই কারণেই রাশিচক্রে মঙ্গল , বুধ , বৃহস্পতি , শুক্র ও শনি গ্রহদের দুটি করে ক্ষেত্র রয়েছে দেখতে পাই |
মঙ্গল গ্রহটিকে পাপগ্রহ বলা হয়ে থাকে | কিন্তু মঙ্গল কথাটিই শুভভাবের নির্দেশক | আমাদের গুরুজনেরা আমাদের আশীর্বাদ করে বলেন ” তোমাদের মঙ্গল হোক ” | সুতরাং মঙ্গলের কারকতার মধ্যে শুভ ও অশুভ দুইই বর্তমান | শুভভাবের মঙ্গল আমাদের শুভই করে থাকেন |
মেষের মঙ্গল – মেষের মঙ্গল অগ্নিদ্যোতক , সেনাপতি কার্তিকেয় | ইনি রাজা নন কিন্তু সাম্রাজ্য রক্ষার দায়িত্ব এর হাতে রয়েছে | অত্যন্ত বিশ্বস্ত, কষ্টসহিষ্ণু এবং দুর্জয় সাহসের অধিকারী| রাজ্য রক্ষা করাকে ইনি নিজের ধর্ম বলে মন করেন | যেকোন বিপদের সম্মুখীন হতে ইনি দ্বিধাবোধ করেন না | কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হতেই ইনি ভালোবাসেন | কঠিন মাটির ওপর দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করা যায় বলে প্রচন্ড পরিশ্রমের ঘর , অসম্ভবকে সম্ভব করার ঘর মকর রাশিতে মঙ্গল তুঙ্গস্থ হন |
বৃশ্চিকের মঙ্গল – বৃশ্চিকের মঙ্গল স্ত্রী সূচক তাই ধীর , স্থির , সহিষ্ণু , ধৈয্যশীল | মেষের মঙ্গলের প্রকাশ প্রখর দিবালোকে , বৃশ্চিকের মঙ্গলের অন্ধকার গুহায় আত্মবিশ্লেষণ এবং আত্মবস্তুর সন্ধানে অত্যন্ত গোপনে ক্রিয়াশীলতা , বাইরে তার কোনও প্রকাশ নেই |
মঙ্গল আমাদের শরীরের শোণিতের প্রতীক | তাই রক্তপাত ও রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত রোগের উপর মঙ্গলের প্রভাব থাকে | হুলযুক্ত প্রাণী বোলতা, বিছা ইত্যাদি মঙ্গলের অধীনে আসে |
চোখ দিয়ে বাইরের জিনিসই দেখা যায়, অন্যের মুখ মুখ দেখা যায়, কিন্তু নিজের মুখ দেখা যায় না | তাই মঙ্গলের জাতক সর্বদা অন্যের দোষ ত্রুটি সহজে ধরতে পারেন, কিন্তু নিজের দোষ ত্রুটি সম্পর্কে একদমই ওয়াকিবহাল নন |
মঙ্গলের (Mars) কারকতা
মঙ্গল ভ্রাতার কারক |
যোদ্ধা ,রক্ষক , বিক্রমী , সেনাপতি ,সাহস ,সহ্যশক্তি , নিয়মশৃঙ্খলতা ,ক্ষিপ্রতা , নিজক্ষমতায় গর্বিত ,স্বাধীনতা ,আত্মপ্রতিষ্ঠা ,শৌর্য –বী র্য (বীরত্ত্ব ) – উৎপীড়ন, হটকারিতা ,বাধাবিপত্তি ,বিবাদ ,মামলা– মোকদ্দমা, যুদ্ধ –বিগ্রহ , দুর্ঘটনা ,ঔদ্ধত্য , তীক্ষ্ণবুদ্ধি ,ভূমি,ভূম্যধিকারী ,গৃহ ,গৃহ নির্মাণ কার্য্য |- দেহে : অন্ত্র ,গুহ্য, excretory glands ,genitals ,female organs , রক্তের লাল কণিকা | পুলিশ ,মিলিটারী ,অস্ত্রচিকিৎসক ,কারখানার কর্মচারী ,নাপিত ,(লোহা বা আগুন নিয়ে কাজ করে ) | রক্ত লাল (blood red ) ,ঋতু : গ্রীষ্ম | খনিজ পদার্থ –লৌহ ,সীসা ,প্রবাল | রোগ : অর্শ ,আমাশয় ,দেহে দুর্ঘটনাজনিত রক্তপাত , রাগ , ক্রোধ ,high blood pressure ,স্ত্রীরোগ ,tumours |বাস্তু মতে – দক্ষিণ দিক |- জন্মনক্ষত্র :পূর্বাষাঢ়া (20 ),উত্তরাষাঢ়া (21 ) | ভাবজগতে মঙ্গলের প্রভাব নেই |