কৃত্তিকা , উত্তরফাল্গুনী, ও উত্তরাষাঢ়া এরা সকলেই রবির নক্ষত্র বলে ফলিত জ্যোতিষে বিবেচ্য | গ্রহগণ ও নক্ষত্রগণ নিজ নিজ সংস্থানুসারে যেরূপ বলাবল ভোগ করিতে পারে, তেমনি জাতকেরও সেই বলাবল অনুসারে তাহাদিগের ক্রিয়ার ইতরবিশেষ পরিলক্ষিত হয় | এক্ষণে গ্রহ ও নক্ষত্রগণের স্বভাবগত পরিচয় দিলে, এতদসংক্রান্ত গূঢ়রহস্যের কতকটা উদ্ভেদ হতে পারবে |
রবি:
রবি বা সূর্য হল সৌরমণ্ডলের সমস্ত শক্তির উৎস | যদিও রবি গ্রহ নয় নক্ষত্র , তবুও রবিকে জ্যোতিষ শাস্ত্রে গ্রহ হিসাবে চিহ্নিত করা হয় | রবি সাত্ত্বিক গুণসম্পন্ন | জ্যোতিষ মতে রবি ক্রূর গ্রহ এবং নৈসর্গিক পাপ গ্রহ | রবি আত্মা ও আত্মশক্তির কারক | রবি বৃক্ষ , অগ্নি,ওষুধ , মশলা সৌভাগ্য , শৌর্য, বীর্য , মহত্ত্ব, সম্মান , রাজা , সংগঠন ক্ষমতা ও উচ্চপদের কারক গ্রহ | শরীরের মধ্যে রবি মস্তক , হৃদয় , চোখ, মুখ পাকস্থলী ইত্যাদির কারক |
কৃত্তিকা (Kirtika)
অবস্থান – মেষরাশির ২৬ ডিগ্রী ৪০ মিনিট হইতে বৃষরাশির ১০ডিগ্রি পর্যন্ত বিস্তার |
অধিপতি – মঙ্গল ও শুক্র |
দেবতা – অগ্নি |
প্রতীক – অগ্নি |
কারকতা – অগ্নি এই নক্ষত্রের কারক | অগ্নি সর্বভূক , ঔজ্জ্বল্যদাতা ,তাপদাতা |অগ্নি তেজের প্রতীক |অগ্নি সম্বন্ধীয় যা কিছু –আগ্নেয়াস্ত্র ,আগুন ,তাপ প্রভৃতি
মেষের কৃত্তিকা মঙ্গলের ক্ষেত্র ,কাজেই মেষের কৃত্তিকার তেজ দীপ্তিময় ,জ্বালাময় ,দাহিকাশক্তি প্রবল,তাহাতে আছে উত্তাপ ,কিন্তু বৃষের কৃত্তিকা শুক্রের ক্ষেত্র ,তাই বৃষের কৃত্তিকায় আছে দীপ্তির স্নিগ্ধ আভা ,তেজোময় উচ্ছাস ,তাতে জ্বালা নেই |
উত্তরফাল্গুনী (Uttor Phalguni)
অবস্থান – সিংহরাশির ২৬ ডিগ্রী ৪০ মিনিট হইতে কন্যারাশির ১০ ডিগ্রী পর্যন্ত |
অধিপতি – রবি ও বুধ |
দেবতা – সূর্য |
প্রতীক – দোদুল্যমান বিছানা |
কারকতা – কারকতা পূর্বফাল্গুনীর মতো ,এর সাথে উদারতা ,বন্ধুত্ব ,প্রেমপ্রীতি ,দুঃখ –দুর্দশা দূর করার চেষ্টা বা বিপন্নকে উদ্ধার করা ,খেলার সাথী ,অন্তরঙ্গ বন্ধু প্রভৃতি | বৃহস্পতি এই নক্ষত্রে শুভফল দেয় |
উত্তরাষাঢ়া (Uttorasara)
অবস্থান – ধনুর ২৬ ডিগ্রী ৪০ মিনিট হইতে মকর রাশির ১০ ডিগ্রী পর্যন্ত |
অধিপতি – বৃহস্পতি ও শনি |
দেবতা – গণদেবতা |
প্রতীক – হাতীর দাঁত |
কারকতা – পূর্বাষাঢ়ার কারকতার সাথে অনেকাংশে মিল আছে , জল ও নৌ বিষয়ক ছাড়া | পূর্বাষাঢ়া ছড়িয়ে পড়ে , উত্তরাষাঢ়া ভেতরে প্রবেশ করে ,মিশে যায় ,স্থায়িত্ব লাভ করে |কোথাও প্রবেশ করে শুভ ও মঙ্গল যারা করেন তাদেরকে গণদেবতা বলা হয় |বসু ,সত্য ,ত্রুতু ,দক্ষ ,কাল ,কাম ,ধৃতি ,কুরু ,পুরুরবা –এই দশজন গণদেবতা এবং যাদের গুণ এই নক্ষত্রে আছে |যোদ্ধা ,সংযমী ,দৃঢ় মনোবল প্রভাবে – বিবাহ বিরোধী (misogamist)| অবিবাহিত থাকার সম্ভবনা